অন্যমনে সাহিত্য. অন্য রকম দৃষ্টিকোন থেকে দেখা একটি প্রতিবিম্ব ভাবনা .. অন্যমনে সাহিত্য.

বৃহস্পতিবার, ১২ আগস্ট, ২০২১

কবিতায় দিশারী মুখোপাধ্যায়

 



কিছু রতি ও কিছু ক্ষতি
==================


# ১ #

মাটিতে উল্লাস মিশে আছে

দুহাতে সংগ্রহ করে সর্বাঙ্গে মাখি



কে জানে সন্ন্যাস কাকে বলে

অবিন্যস্ত জীবনে আমি আছি আলুথালু

আঙ্গুলের পাবে পাবে জমা রাখি হর্ষময় বিষাদ

আকাশে আঁকা সে এক মুখের প্রণয়

যার চোখে অনন্ত আঁধার মুহূর্তে আলো



উল্লাসের সারাদেহে পরাগের প্রেম



# ২ #

রাতের যে স্বপ্ন পজে গিয়েছিল

সে আবার চালু হয়েছে



ঘুমের ষোলোআনা কয়েন

যখন থিতিয়ে পড়েছে অনেকটা তলায়

ঘুমের মধ্যেই ঘুম অনুভব করে

বুকের নিচের পুরনো বিবর্ণ ব্যাথাগুলো

হাতে পায়ের গাঁটে গাঁটে ছড়িয়ে পড়েছে

শরীরের অসারতা স্পষ্ট বুঝতে পারে

চিত করে ফেলে তাকে পেরেকে গাঁথছে কেউ



রাতের যে স্বপ্ন পজে যায়

সে আবার জেগে ওঠে,আবার পজে যায়,আবার...

স্বপ্নের অভিজ্ঞতা মানুষকে বলে

অসম্পূর্ণতা দিয়েই নাটকের মঞ্চ তৈরি হয়


# ৩ #

তুমি যখন তোমার স্বপ্নের হাতে বিবস্ত্র হও

উঠে দাঁড়াবার ক্ষমতা অনেকদূর থেকে

আমাকে বিদ্রুপ করে

বিদ্রুপের রঙ যেমনই হোক

দাহ্যক্ষমতা সবসময়ই ক্রমবর্ধমান থাকে

আর বিবস্ত্র হতে হতে তুমি

আইসক্রিমের মতো লেহন করো তাকে 





নগ্নতা
===============


এমন একটা আড়ালের পাশে গিয়ে তুমি দাঁড়াচ্ছ, যে

তোমাকে নগ্ন করে আরও

শব্দের অভাবে আমরা আজ যন্ত্রণা প্রকাশ করতেও অপারগ

নগ্ন শব্দটি তার গোপনীয়তার অধিকার হারিয়েছে এতোটাই

কঙ্কালে ঠেকে যাচ্ছে হাত



মাটির তলা থেকে তুলে আনা মাটিতে তীব্র অ্যানিমিয়া










মরণকূপ
=================



চুপচাপ পড়ে আছে

সৃষ্টিকর্তা তাকে যেরকম গায়ের রঙ দিয়েছে

প্রায় সেরকমই নিয়ে

নার্ভের রোগীর মতো (যদি কোনো রোগবালাই না থাকে ) মাঝেমাঝে

পিটপিট করে তাকায় , ফের ঘুমিয়ে পড়ে

হাত পা তো নেই যে ছুঁড়বে



মানুষেরা, আজকাল , বাচ্চা কাঁদলেও

ততটা ব্যস্ত হয়না

আর সে তো কাঁদে না, শুধু জানান দেয় , তাও

দূর থেকে কারো খোঁচায়



আর কে না জানে

চরিত্র বলে তার কিছু নেই

যখনতখন সে অফিসের বস থেকে সুপ্রিমকোর্ট

ধর্ষিত , পরকীয়া কিংবা

ডোবার-ম্যান হয়ে উঠতে পারে

ওঠেও







জীবন
=================



কখন শুরু হয়েছিল জানিনা

কখন শেষ হবে

মধ্যখানটুকু নিয়ে মগ্ন হয়ে আছি



শুরুতে ছিলাম না

সগর রাজার ছেলেরা পানে ব্যস্ত ছিল

চিল এসেছিল মেঘের আড়াল থেকে

ছোঁ একমাত্র ছিল তারই



হর্ম্যরাজি ভেঙে পড়ার কথা

বলাবলি করছে লোকেরা

চাপা না পড়ার উপায় আছে কিনা জানে না

চেষ্টাও নেই

টেবিলে এখনো অনেক আহার আর পানীয়



আমি তো লীন হতেই চেয়েছিলাম , চাইনি কখনো

শরীরে ব্লটিং






একটি পানীয় জলের পুকুর
====================



কানায় কানায় ভরা পুকুরের স্বচ্ছ জল

থার্মোমিটারের ঔদ্ধত্যে শুকিয়ে গেল

পড়ে রইল কাদা আর নাগরিক আবর্জনা

কে জানত পুকুরের নিচে এসব ছিল

জলের নিচে তো কেবল সবুজ গাছ আর

নীল আকাশের ছায়া দেখা যেত



এরপর শুধু প্রাসঙ্গিক রইল উষ্ণতা , শুষ্কতা

আর গলা শুকিয়ে আসা প্রাকমৃত্যুর অভিজ্ঞতা



বিশ্বাস শব্দটিকে অক্সিজেনের মতো ধরে থাকলে

আবার একদিন খুব বৃষ্টি হবে , জেগে উঠবে

সেইসব জলাশয়ের মৃত জীবাশ্মগুলি

কাদার কথা ভুলে গিয়ে আবার আমরা , দেখব

গাছ আর আকাশের মায়াবী ক্যানভাস

খানিকটা মেখে ঠাণ্ডা হবো ,খানিকটা পান করব

ধুয়ে নেব খানিকটা নিজেদের ক্লেদ










 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন